ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে বিদেশি ভাষা শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে কর্মশালা
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে “আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড ডিজিটাল টুলস ইন দ্য টিচিং অফ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজেস: টার্নিং অ্যা পারসিভড থ্রেট ইনটু অ্যা পাওয়ারফুল অ্যালাই” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালাটি আয়োজন করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ ল্যাঙ্গুয়েজেস।
কর্মশালাটি পরিচালনা করেন ড. নুরা এল সায়েদ রদ্রিগেজ। তিনি একজন শিক্ষা ও ভাষা বিশেষজ্ঞ। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি অ্যাকাডেমিক লিডারশিপ, বহুভাষিক শিক্ষা এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনে কাজ করছেন।
ড. নুরা এল সায়েদ রদ্রিগেজ ইউনিভার্সিটি সেন্ট যোশেফ ডি বৈরুত থেকে বহুভাষিক শিক্ষা, বহুসংস্কৃতি শিক্ষা ও ইকুইটি স্টাডিজে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি এই কর্মশালায় মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকাজুড়ে তার কাজের অভিজ্ঞতালব্ধ নানা প্রেক্ষাপট ও বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরেন।
ড. রদ্রিগেজ বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোনোভাবেই হুমকি নয় বরং এটি বিদেশি ভাষা শিক্ষায় একটি শক্তিশালী সহায়ক হতে পারে যদি এটাকে সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়।
কর্মশালায় এআই ব্যবহারের বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেখানে এর বিভিন্ন ফিচার যেমন, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রদান, ব্যাকরণ ও ভোকাবুলারি উন্নয়ন, লেখায় সহায়তা এবং উচ্চারণ অনুশীলনের সুবিধাগুলো তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা সরাসরি এসব টুলস ব্যবহার করেন এবং এতে শিক্ষাক্ষেত্রে এআই ব্যবহারের নৈতিক দিক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা হয়।
আলোচনায় উঠে আসে যে, ভাষা শিক্ষায় এআই ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুবিধা রয়েছে- যেমন, শিক্ষার্থীরা নিজের মতো করে শিখতে পারে, ক্লাসের বাইরে যেকোনো সময় অনুশীলনের সুযোগ, গেমের মতো আকর্ষণীয় উপায়ে শেখার সুযোগ এবং বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসে আন্তঃসাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা অর্জন। এসব সুবিধা শিক্ষার্থীদের শেখার অভিজ্ঞতাকে আরও প্রাণবন্ত ও বাস্তবমুখী করে তোলে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভাষা শিক্ষক, প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী এবং ডিজিটাল লার্নিংয়ে আগ্রহীরা এই কর্মশালায় অংশ নেন। তারা এআই ব্যবহারের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। অংশগ্রহণকারীরা জানান, শিক্ষার্থীরা কীভাবে এবং কখন এআই ব্যবহার করছে, তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে অ্যাকাডেমিক সততা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকার প্রয়োজন বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ইন্টারঅ্যাকটিভ অনুশীলনে অংশ নেন, যেখানে অনুপ্রেরণা, উচ্চারণ বা ব্যাকরণ শেখার সমস্যার মতো নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো উপযুক্ত এআই টুলের সাহায্যে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। এই সেমিনারে শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য কার্যকর টুল নির্বাচন করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও কর্মশালায় এআই নিয়ে প্রচলিত নানা ভুল ধারণা এবং বাস্তবতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। এতে করে অংশগ্রহণকারীরা এআই এর ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে একটি বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করেন।
এই আলোচনা শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের এআই ব্যবহারের নৈতিক, প্রাসঙ্গিক ও কার্যকর উপায় নিয়ে আরো গভীরভাবে চিন্তা করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
ড. রদ্রিগেজ তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত এআই টুলস সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা। তাহলে তারা শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাবেন। এতে করে শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের পাঠদান পদ্ধতিতে উপযুক্ত টুলস যুক্ত করতে সক্ষম হবেন, যা শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং শিক্ষাকে আরও কার্যকর করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে এআই ব্যবহারের নৈতিক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা, যাতে শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীল ও ইতিবাচকভাবে এআই ব্যবহার করতে শেখে। এই কর্মশালাটি অংশগ্রহণকারী শিক্ষক ও শিক্ষা পেশাজীবীদের এআই সংক্রান্ত বাস্তব জ্ঞান, দক্ষতা ও মনোভাব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available