ভ্যাপসা গরমে ময়মনসিংহে তালের শাঁস বিক্রি জমজমাট
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ৯ই আষাঢ় ১৪৩২ ভোর ০৫:০২:৪৬ (24-Jun-2025)
  • - ৩৩° সে:

ফিচার

ভ্যাপসা গরমে ময়মনসিংহে তালের শাঁস বিক্রি জমজমাট

৮ জুন ২০২৪ সকাল ১১:৫১:২৮

সংবাদ ছবি

হুমায়ুন আহমেদ: তালের শাঁসের বেশিরভাগ অংশ জলীয় হওয়ায় এই ফল খেলে শরীরে পানিশূন্যতা দূর হয়। এছাড়াও রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। এজন্য ভ্যাপসা গরমে ময়মনসিংহে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়েছে। যে যেখানে তালের শাঁস পাচ্ছেন, খেয়ে তৃপ্তি মেটাচ্ছেন।

সরেজমিনে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়, থানাঘাট, চরপাড়া, নতুন বাজার, কাচিঝুলি মোড়সহ বিভিন্ন অলিগলিতে মাটিতে বসে কিংবা ভ্যানগাড়িতে করে তালের শাঁস বিক্রি করতে দেখা যায়। গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ফল কিনে খাচ্ছেন। কম দামে কিনতে পেরে ক্রেতারা যেমন খুশি, জমজমাট ব্যবসা হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও।

পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে শত শত তালের শাঁস নিয়ে বসে ছিলেন জালাল মিয়া। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গাছ থেকে তাল সংগ্রহ করি। এরপর সড়কের পাশে বসে বিক্রি করি। ভ্যাপসা গরমের কারণে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। একেকটি তাল ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সবার কাছে তালের শাঁস প্রিয়। আবার মৌসুমি ফল বলে শখের বশেও অনেকে এটি কিনে খায়।’

চরপাড়া এলাকায় তালের শাঁস বিক্রেতা জব্বার মিয়া বলেন, ‘১২ বছর ধরে গরম এলেই এই ফল বিক্রি করি। গরম যতো বাড়ে তালের শাঁসের চাহিদাও বাড়ে। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা লাভ করতে পারি। এতে পরিবারের জন্য খরচ করেও ভালো টাকা আয় হয়।’

তালের শাঁসের ক্রেতা খায়রুল আলম নামের এক যুবক বলেন, ‘তালের শাঁসে কোনও ধরনের ভেজাল নেই। তাই মাঝে মধ্যেই কিনে খাই। এছাড়া এটি খেতেও সুস্বাদু।’

বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন আসমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘তালের শাঁস আমার খুবই পছন্দের। কোনো দোকানে এই ফল পাওয়া যায় না। তাই মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন সড়কের পাশে কিংবা অলিগলিতে বিক্রি করা তালের শাঁস কিনে বাড়িতে নিয়ে যাই। এরপর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল ভাগবাটোয়ারা করে খাই।’

পুষ্টিবিদদের মতে, এই ফলে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। এর বেশিরভাগ অংশ জলীয় হওয়ায় এটা খেলে দ্রুত শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ তাল ক্যানসার প্রতিরোধ করে। স্মৃতিশক্তি ভালো রাখে, ভিটামিন বি-এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ করে। তালের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধক। এটি ডায়েটের জন্যও বেশ কার্যকর। শুষ্ক ত্বক ও চুল পড়া বন্ধ করে। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্ত্রের রোগ নিরাময়েও এই ফলের ভূমিকা রয়েছে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপপরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, ‘নানা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ তালের শাঁস প্রচণ্ড দাবদাহে প্রশান্তি এনে দেয়। তাই ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গাছে ফলের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তালের সরবরাহও কমে যাচ্ছে। ফল বাড়াতে, বজ্রপাতে ক্ষতি এড়ানোসহ নানা উপকারী এই গাছ প্রচুর পরিমাণে লাগানো প্রয়োজন।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ